নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় ট্রাস্টিকে দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

আইন ও আদালত ঢাকা

নিখাদ বার্তাকক্ষ : অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে করা দুদকের মামলায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় ট্রাস্টিকে দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন আদালত।
আসামিরা হলেন, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদ, বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য এম এ কাশেম, বেনজীর আহমেদ, রেহানা রহমান, মোহাম্মদ শাহজাহান এবং আশালয় হাউজিং ও ডেভেলপারস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিন মো. হিলালী।
মঙ্গলবার ঢাকার সিনিয়ার স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েস দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিত এ আদেশ দেন। দুদকের কোর্ট পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে সোমবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েস চার ট্রাস্টিকে একদিন করে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ চার ট্রাস্টি হলেন- রেহানা রহমান, এম এ কাশেম, মোহাম্মদ শাহজাহান ও বেনজীর আহমেদ।
এদিন আদালতে তাদের হাজির করে পুলিশ। এরপর দুদক তাদের জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন করেন। অপর দিকে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা কারাগারে প্রথম শ্রেনীর ডিভিশন চেয়ে আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক তাদের সাত কার্যদিবসের মধ্যে একদিন জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নির্দেশ দেন। এছাড়া কারাবিধি অনুযায়ী তাদের ডিভিশন দেওয়ার জন্য কারা-কর্তৃপক্ষে নির্দেশ দেন।
গত রোববার তাদের আগাম জামিনের আবেদন সরাসরি খারিজ করে আদেশ দেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের বেঞ্চ। একইসঙ্গে তাদের শাহবাগ থানার হেফাজতে দেওয়া হয়।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের জমি কেনা বাবদ অতিরিক্ত ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয় দেখিয়ে তা আত্মসাতের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে গত ৫ মে মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী।
আসামিরা হলেন- নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদ, বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য এম এ কাশেম, বেনজীর আহমেদ, রেহানা রহমান, মোহাম্মদ শাহজাহান এবং আশালয় হাউজিং ও ডেভেলপারস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিন মো. হিলালী।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে পাশ কাটিয়ে ট্রাস্টি বোর্ডের কয়েকজন সদস্যের সম্মতির মাধ্যমে ক্যাম্পাস উন্নয়নের নামে ৯ হাজার ৯৬ দশমিক ৮৮ ডেসিমেল জমির দাম ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ ১৩ হাজার ৪৯৭ টাকা বেশি দেখিয়ে তা আত্মসাৎ করেছে।
আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের টাকা আত্মসাতের হীন উদ্দেশ্যে কম দামে জমি কেনা সত্ত্বেও বেশি দাম দেখিয়ে তারা প্রথমে বিক্রেতার নামে টাকা প্রদান করেন। পরবর্তীতে বিক্রেতার নিকট থেকে নিজেদের লোকের নামে নগদ চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে সেই টাকা আবার নিজেদের নামে এফডিআর করে রাখেন এবং পরবর্তীতে নিজেরা এফডিআরের অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।
অবৈধ ও অপরাধলব্ধ আয়ের অবস্থান গোপনের জন্য এই অর্থ হস্থান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে অর্থ পাচারের অপরাধও করেন। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ৪০৯/১০৯/৪২০/১৬১/১৬৫ক ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর ৪(২)(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন- ২০১০ অনুযায়ী নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ বোর্ড অব ট্রাস্টিজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন অ্যান্ড আর্টিকেলস (রুলস অ্যান্ড রেগুলেশনস) অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় একটি দাতব্য, কল্যাণমুখী, অবাণিজ্যিক ও অলাভজনক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *