নিউজ ডেস্ক : বিশ্বজুড়ে ইসলামফোবিয়ার শিকার হওয়া দেশগুলোর মধ্যে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী যোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপন করা উচিৎ বলেই মনে করেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। তিনি বলেন, “ইসলামফোবিয়া রোগের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে আমাদের নিজস্ব ধর্মীয় নেতাসহ বিবেকবান রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী, গণমাধ্যম কর্মী ও ধর্মগুরুদের একত্রিত করতে হবে।”
মঙ্গলবার (২৫ মে) আঙ্কারায় অনুষ্ঠিত প্রথম আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এবং ইসলামফোবিয়া সিম্পোজিয়ামে এসব কথা বলছিলেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট।
এরদোগান বলেন, ইসলামফোবিয়া প্রতিরোধের প্রচেষ্টা চালানো উচিত, যা মানবতার জন্য শান্তি ও সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং যা সাধারণ জ্ঞান কর্ম প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা করা হবে। তিনি আরও যোগ করেন, ইসলামী বিশ্ব যখন নিজেদের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠা করবে, তখন স্বল্প সময়ের মধ্যেই ইসলামফোবিয়ার বিরুদ্ধে আমাদের অগ্রগতি সম্ভব হবে।
এরদোগান জোর দিয়ে বলেন, ইসলামফোবিয়া ক্যান্সারের মতোই বিশ্বের অনেক জায়গায়, বিশেষত পশ্চিমে ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, ৯/১১-এর সন্ত্রাসী হামলার পর মার্কিন প্রশাসন কর্তৃক মুসলিমদেরকে “সন্ত্রাসী” কালিমা লেপন করার কৌশলটির একটি কার্যকর পদক্ষেপ ছিল “ইসলামফোবিয়ার ভাইরাস”কে উজ্জীবিত করা, যা ইতিমধ্যেই বহু সমাজের সাংস্কৃতিক কাঠামোতে বিদ্যমান।
তিনি এসময় এই পশ্চিমা হুমকির মাত্রা নিয়ে আলোচনার পরিবর্তে যারা বর্ণবাদী এবং বৈষম্যমূলক প্রবণতার প্রভাবে নিমজ্জিত তারা খুব সহজেই এই সহজ উপায়টি গ্রহণ করেন বলে মন্তব্য করেন।
পশ্চিমা দেশগুলো তাদের ফ্যাসিবাদী বক্তৃতা দিয়ে জনমতকে ধ্বংস করে বৈশ্বিক শক্তি ভারসাম্যের পরিবর্তন এনে এর কারণে সৃষ্ট অনিশ্চয়তা এড়ানোর চেষ্টা করে। শুধু তাই নয়, প্রান্তিক বর্ণবাদী আন্দোলনকে এখন পশ্চিমা রাজনীতির কেন্দ্রে স্থান দেওয়া হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তুর্কি নেতা।
“যারা দীর্ঘদিন ধরে ধর্মীয় স্বাধীনতার দুর্গ হিসাবে নিজেদেরকে বিশ্বে একটি বিশিষ্ট অবস্থানে রেখেছেন, তারা আজ মুসলমানদের সমস্ত প্রতীক নিষিদ্ধ করার প্রতিযোগিতা করেছেন,” বলেও যোগ করেন এরদোগান।
ইসলামফোবিয়ার এই ক্রমবর্ধমান হামলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সমস্ত নাগরিক বিশেষত রাজনৈতিক দল এবং পুলিশ সংগঠনগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য দায়বদ্ধ পশ্চিমা কর্তৃপক্ষ এখন রীতিমত ইসলামের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছে।
তিনি বলেন, “রাজনৈতিক ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর এই প্রবণতা পশ্চিমা দেশগুলোতে বসবাসরত গণতান্ত্রিক মানুষের মধ্যে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে একটি ভিত্তিহীন কুসংস্কার বিকাশের দিকে পরিচালিত করে। আসলে যেখানে স্বাধীনতা অদৃশ্য হয়ে গেছে সেখানে সমৃদ্ধি দীর্ঘকাল ধরে টিকতে পারে না।”
রেডিও এন্ড টেলিভিশন সুপ্রিম কাউন্সিল (আরটিইউকে), ধর্ম বিষয়ক প্রেসিডেন্সি, এরসিয়েস বিশ্ববিদ্যালয়, তুর্কি রেডিও এবং টেলিভিশন কর্পোরেশন (টিআরটি) এবং আঙ্কারা ভিত্তিক নীতিমালা থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক এসইটিএ ফাউন্ডেশন কর্তৃক আয়োজনে দুই দিনব্যাপী এ সিম্পোজিয়ামটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্মেলন এবং প্রদর্শনী কেন্দ্র খ্যাত এটিও কংগ্রেসিয়ামে। সূত্র- আনোদোলু এজেন্সি।