লকডাউন কঠোরভাবে কার্যকর করতে স্থানীয়দের বোঝাচ্ছি : ডিসি হারুন।

বাংলাদেশ সমাজ সেবা সাস্থ্য ও চিকিৎসা

ডেস্ক রিপোর্ট।।

লকডাউন কঠোরভাবে কার্যকর করতে স্থানীয়দের বোঝাচ্ছি : ডিসি হারুন

 

সরকারের ‘রেড জোন’ ঘোষিত রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজার এলাকার আইবিএ হল সংলগ্ন প্রবেশদ্বারে এসেছেন দুই আইনজীবী। তাঁরা ভেতরে প্রবেশ করতে চান। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাঁদের ঢুকতে দিতে চাননি ভেতরে।

এই নিয়ে বেশ খানিকটা বাকবিতণ্ডা উভয়ের ভেতর। পুলিশ সদস্যরা বলছেন, ঢুকতে দেওয়া যাবে না। আইনজীবীরা বলছেন, তাঁদের ঢুকতে দিতে হবে এবং তাঁরা স্থানীয়। ঘটনা আজ রোববার বিকেল ৪টার।

শুধু আইনজীবী নয়, বেশিরভাগ পেশার মানুষকে রেড জোন এলাকা থেকে বের হতে দিচ্ছে না পুলিশ। বের হতে পারছে শুধু জরুরি সেবায় যুক্ত থাকা স্বাস্থ্যকর্মী ও সংবাদকর্মীরা। এর বাইরে যারা প্রবেশ করছে বা বের হচ্ছে যাদের খুব জরুরি দরকার রয়েছে এবং যেতেই হবে। তবে যথোপযুক্ত কারণ দেখিয়ে নাম-পরিচয় লিখে যেতে হচ্ছে বাইরে।

স্বেচ্ছাসেবক ও পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়া এক নারী ও আরেক পুরুষ আইনজীবীর সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। কিন্তু তাঁরা নাম প্রকাশ না করতে অনুরোধ করেন। একজন আইনজীবী বলেন, ‘আমরা গতকাল বাইরে গিয়েছিলাম। এখন আর ঢুকতে পারছি না। অথচ, আমার বাসা এখানেই। আমরা তো সচেতন নাগরিক। প্রয়োজনে বাইরে যাব না? এখন আমরা কোথায় থাকব?’

তবে যথোপযুক্ত কারণ দেখিয়ে অনেককেই প্রবেশদ্বার দিয়ে বের হতে কিংবা ঢুকতে দেখা গেছে। শাহিনা নামের এক নারীর কাছে টাকা ছিল না বলে তাঁকে বের হতে দেওয়া হয়েছিল ব্যাংকে যেতে। আবার উপযুক্ত কারণ দেখাতে না পারায় অনেককে ব্যারিকেটের ভেতরে থেকে বের হতে বা প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। ঘটনাস্থলে থেকে এসব দৃশ্য দেখা গেছে।

প্রবেশ কিংবা বের হওয়া সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের নবনিযুক্ত উপকমিশনার (ডিসি) হারুন অর রশিদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সার্বক্ষণিকই আমরা বিভিন্ন চেকপোস্টে অবস্থান করছি। কারো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দরকার হলে আমরা মানুষকে সহযোগিতা করছি। তবে সাধারণত আমরা জরুরি সেবায় নিয়োজিত ছাড়া কাউকে বের হতে কিংবা ঢুকতে দিচ্ছি না। তাই তিনি যেই হোক না কেন। কিন্তু ধরেন, কারো বাসায় টাকা নেই। তাঁর ব্যাংকে যেতে হবে। তিনি তো বাইরে যাবেনই। সেজন্য আমরা মানবিকতার বিষয়টিও বিবেচনায় নিচ্ছি। মোট কথা হচ্ছে, কাউকে বাইরে যেতে হলে যথোপযুক্ত কারণ দেখিয়ে যেতে হবে। যথোপযুক্ত কারণ দেখালে আমরা অবশ্যই তাঁকে সহযোগিতা করছি। এ ছাড়া লকডাউন আরো কঠোরভাবে কার্যকর করতে আমরা স্থানীয়দের বোঝাচ্ছি। দু-একজন ছাড়া বেশিরভাগ মানুষই আমাদের সহযোগিতা করছে।’

ওই প্রবেশদ্বারে দাঁড়িয়ে ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফরিদুর রহমান খানের ব্যক্তিগত সহকারী মাসুদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘গত চারদিন আমরা দায়িত্ব পালন করেছি। আজ সকাল থেকে পুলিশ মূল দায়িত্ব পালন করা শুরু করেছে। এত দিন পুলিশ আমাদের হেল্প করেছে, এখন আমরা পুলিশকে হেল্প করছি। লকডাউনে আগের চেয়ে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। কেউ বাইরে গেলে বা ভেতরে প্রবেশ করলে নাম-ধাম লিখে প্রবেশ করছেন। এই যে আইনজীবীরা পর্যাপ্ত কারণ দেখাতে পারেননি বলে তাদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আজ আমি নিজে মাননীয় মেয়র আতিকুল ইসলামের কাছে কিছু অভিযোগ দিয়েছি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস বিক্রির বিষয়ে। ই-কমার্সের কয়েকটি বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান দ্রব্যের দাম বেশি রাখছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। এই অভিযোগ আমি খতিয়ে দেখেছি। ঘটনা সত্য। যেমন বাইরে মুরগির মাংস ১৮০ টাকা বিক্রি হলেও চালডাল ডটকম নামের একটি প্রতিষ্ঠান বিক্রি করছিল ২৩০ টাকা পর্যন্ত। প্রতিষ্ঠানটিকে আমি কাল থেকে ভেতরে ঢুকতে নিষেধ করে দিয়েছি।’

এই অভিযোগের বিষয়ে চালডাল ডটকম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কারো সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *