যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ছাড়ছে রেকর্ড সংখ্যক মানুষ

আন্তর্জাতিক

নিউইয়র্কের একটি অ্যাকাউন্টেন্সি ফার্ম জানিয়েছে, রেকর্ড সংখ্যক আমেরিকান তাদের নাগরিকত্ব প্রত্যাহার করছে। ব্যামব্রিজ অ্যাকাউন্টেন্টস জানিয়েছে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ৫ হাজার ৮১৬ জন মার্কিন নাগরিকত্ব ছেড়ে দিয়েছে। তারা বলছে, এটা এর আগের ছয় মাসের চেয়ে ১২১০ ভাগ বেশি। ওই সময় মাত্র ৪৪৪ জন মার্কিন নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছে। খবর দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টের।
চলতি বছরের প্রথম দুই ত্রৈমাসিকেও এই সংখ্যাটা সর্বোচ্চ সংখ্যক, যা যথাক্রমে ২ হাজার ৯০৯ এবং ২ হাজার ৯০৭ জন। ২০১৯ সালে মাত্র ২ হাজার ৭২ জন আমেরিকান নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছে।
ব্যামব্রিজ সাধারণত অভিনয়ের মতো ক্রিয়েটিভ ফিল্ডে কাজ করেন এমন মার্কিন ও ব্রিটিশ প্রবাসীদের করের কাগজপত্র তৈরি করে থাকে। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, মহামারির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসীরা দেশটির সঙ্গে সম্পর্কের পাট চুকাচ্ছে। এছাড়া বর্তমান রাজনৈতিক পরিবেশ এবং করের জটিলতার কারণেও তারা যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করছে।
প্রতিষ্ঠানটির একজন পার্টনার অ্যালিস্টেইর ব্যামব্রিজ সিএনএনকে বলেন, এই সংখ্যাটা মূলত ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে গেছে যাওয়া ব্যক্তিদের। যারা সবকিছু দেখে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যথেষ্ট হয়েছে। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ঘিরে যা ঘটছে, করোনাভাইরাস মহামারি যেভাবে মোকাবিলা করা হচ্ছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান রাজনৈতিক নীতি- নিয়ে মানুষজন বিরক্ত।
যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে বসবাসকারী মার্কিনির সংখ্যা প্রায় ৯০ লাখ। প্রতি বছর তাদের ট্যাক্স রিটার্ন দিতে হয় এবং তাদের সব বিদেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, বিনিয়োগ ও পেনশনের তথ্য দিতে হয়।
অ্যালিস্টেইর বলেন, বর্তমান মহামারির কারণে মানুষজন যুক্তরাষ্ট্রের তাদের সম্পর্ক নিয়ে ভাবার সময় পেয়েছে এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে বর্তমান রাজনৈতিক পরিবেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ট্যাক্স রিপোর্টিং সহ্যের বাইরে।
তবে যারা তাদের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেনি তারা করোনা মহামারিতে মার্কিন সরকারের আর্থিক সহায়তা পাবে।
এদিকে আগামী নভেম্বরের নির্বাচনের কারণে মানুষজনের নাগরিকত্ব ছাড়ার ওপর কোনও প্রভাব পড়বে কিনা জানতে চাইলে অ্যালিস্টেইর বলেন, যদি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পুনর্নির্বাচিত হন তাহলে, আমরা বিশ্বাস করে আরও অনেকেই নাগরিকত্ব ত্যাগ করবে।
কোনও মার্কিনি তার নাগরিকত্ব ত্যাগ করতে চাইলে তাকে ২ হাজার ৩৫০ ডলার দিতে হয় সরকারকে। আর যারা বাইরের দেশে থাকেন তাদের ফি দেয়ার পাশাপাশি ওই দেশে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসে সশরীরে হাজির থাকতে হয়।
যেসব ব্যক্তি মার্কিন নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছে তাদের নামের তালিকা প্রতি তিন মাস অন্তর প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *