প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী বলেছেন, জ্বালানি নীতি সরকারের সার্বিক চিন্তার মধ্যে রাখতে হবে। আমরা মানুষের উন্নয়ন চাই। আমরা গ্যাস ও বায়ুর সম্পদের মূল্যায়ন করেছি।
গতকাল রোববার জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস উপলক্ষে জ্বালানি বিভাগের আয়োজনে অনলাইনে সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, দেশের ভোলাতে আরও গ্যাস পাওয়া যাবে। কয়লা তুলতে গেলে জমি আর ফেরত পাবো না। এজন্য আমরা একটি সমীক্ষা করেছি। এই সমীক্ষায় অনেকগুলো সমস্যা আমাদের সামনে এসেছে। এগুলো বিবেচনায় নিয়েই কাজ করতে হচ্ছে। আমাদের সাগরে যদি গ্যাস পাওয়া যায়, তাহলে তা আসতে ১০ বছর লাগবে। এজন্য বিকল্প চিন্তাও একই সঙ্গে করতে হবে। উপদেষ্টা জ্বালানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহŸান জানান।একই সঙ্গে মানসম্পন্ন জ্বালানি সরবরাহেরও নির্দেশ দেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, বঙ্গবন্ধু জ্বালানি খাতে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ এবং স্বনির্ভরতার ওপর জোর দিয়েছিলেন। আমাদেরও সেটি করতে হবে। জ্বালানি নীতি সরকারের সার্বিক চিন্তার মধ্যে রাখতে হবে। বঙ্গবন্ধুর দুঃসাহসিক পদক্ষেপে এ খাতের মেরুদন্ড গড়ে দিয়ে গিয়েছিলেন। আমাদের সেই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেন, ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশকে অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল। ৯ আগস্ট আমাদের জন্য একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ দিন। যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশে ৫টি গ্যাস ক্ষেত্র কিনে নেন বঙ্গববন্ধু। তার স্বনির্ভর জ্বালানি খাতের দর্শন অনুসরণ করেই বর্তমান সরকার কাজ করছে। এতে করে আমাদের নিজস্ব গ্যাস উৎপাদন বেড়েছে। এছাড়াও জ্বালানির সংস্থান নিশ্চিত করতে আমদানি করা হচ্ছে। এতে করে আমাদের রফতানি বাড়ছে। আমরা সম্পদের সুষ্ঠু পরিকল্পনা করছি। এখন বৈশ্বিক জ্বালানি খাতে পরিবর্তন হচ্ছে। এজন্য বহুমুখী জ্বালানি ব্যবহার করছে সরকার। কিন্তু আমাদের কারিগরি জ্ঞান এবং দক্ষ জনবলের অভাবের কারণে অনেক কাজ দ্রæতই করা যায় না। তিনি বলেন, বিএনপি সরকারের সময় মিয়ানমারের থেকে ভারত পাইপ লাইন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পাকিস্তানের কথা শুনে বিএনপি সেই উদ্যোগে সংযুক্ত হয়নি। এতে করে আমরা ২০/২৫ বছর পিছিয়ে গেছি। সবাইকে সাশ্রয়ী মূল্যে জ্বালানি দেওয়ার প্রচেষ্টা রয়েছে সরকারের।
বিদ্যুৎ জ্বালানি খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. শহিদুজ্জামান সরকার বলেন, জ্বালানি নিরাপত্তায় তার সরকার কাজ করে যাচ্ছে। তবে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে আমদানি নির্ভরতা কমাতে হবে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন জ্বালানি বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আনিসুর রহমান। বক্তব্য রাখেন সংসদীয় স্থায়ি কমিটির সদস্য আবু জাহির, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান এবি আবদুল ফাত্তাহ, বিপিসি চেয়ারম্যান সামছুর রহমান, বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ড. সুলতান আহমেদসহ পিডিবি, আরইবি চেয়ারম্যান এবং বিভিন্ন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।