নেই থাকার বাসস্থান, ভিক্ষায় চলে বিধবা নারীর সংসার।

Uncategorized প্রচ্ছদ ভোলা সমাজ সেবা

নিখাঁদ বার্তা কক্ষ।।

৩০ আগস্ট ২০২৩,  |

বেঁচে থাকার জন্য চলছে জীবন সংগ্রাম।
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার চরমানিকা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড দক্ষিণ চরমানিকা গ্রামের আবেদা খাতুন (৫৫) প্রায় ১২ বছর ধরে বিধবা। স্বামী রহমান হাওলাদারের মৃত্যুর পর থেকে প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে ভিক্ষায় চলে তার সংসার।

সরেজমিন মঙ্গলবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, একটি ভাঙ্গা ঘরে বসবাস করেন আবেদা খাতুন। একটি ভাঙ্গা ঘর ছাড়া আর কোনো জায়গা জমি নেই। ভূমিহীন ও গৃহহীন দুটোই তিনি। অভাবের কারণে নিজের এবং প্রতিবন্ধী মেয়ের মুখে ভালো কিছু খাবার তুলে দিতে পারেন না।

আবেদার দুই ছেলে মেয়ে। ছেলে ছালেম হাওলাদার (২২), মেয়ে প্রতিবন্ধী মমতাজ বেগম (৩৩)। ছেলে কোনো ধরনের ইনকাম করতে পারলেও সে বাড়িতে আসে না। এমনকি মা-বোনের খোঁজখবর রাখেন না। আর মেয়েটা প্রতিবন্ধী, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অচল, অক্ষম। তাকে নিয়েই বিধবা আবেদা খাতুন চরমানিকা ৩ নম্বর ওয়ার্ড বেড়িবাঁধের ঢালে একটি ভাঙ্গাঘরে বসবাস করেন।

বিধবা আবেদা খাতুনের সঙ্গে আলাপ করলে তিনি বলেন, স্বামীর মৃত্যুর পরে ১০-১২ বছর বেড়িবাঁধের ঢালে ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করি। আমার মানসিক, শারীরিক প্রতিবন্ধী একটি মেয়ে নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছি। খেয়ে না খেয়ে দিনযাপন পার করতে হয়। ঘরে বসে থাকতে থাকতে চিকন হয়ে পঙ্গুত্ব হওয়ার পথে আমরা মা-মেয়ে। কোনো প্রকার কাজ করতে পারছি না।

আবেদা খাতুন বাউফল উপজেলার হাসনাবাদ গ্রামের জয়নাল খলিফার মেয়ে।

এ সময় তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে আরও বলেন, কেউ যদি আমাকে দুমুঠো ভাতের ব্যবস্থা এবং একটি বসতঘরের ব্যবস্থা করে দেন আমি তাকে মন ভরে আল্লাহর কাছে দোয়া করব।

চরমানিকা ইউনিয়ন ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. ফারুক মিয়া ও স্থানীয় এছাক হাওলাদারসহ অনেকেই জানান, বিধবা জাবেদা খাতুনের জন্য একটা গৃহের খুবই প্রয়োজন। স্থায়ী একটি আবাসনের ব্যবস্থা হলে শেষ সময়টা অন্তত একটু শান্তি পেত। জীবনের শেষপ্রান্তে এসে বিধবা আবেদা খাতুনের একটু মাথাগোঁজার ঠাঁই হবে এমনটাই দাবি তাদের।

চরফ্যাশন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মামুন হোসাইন জানান, ওই বিধবা নারী আবেদা খাতুন এবং তার প্রতিবন্ধী মেয়ে মমতাজ বেগম উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে এসে আবেদন করলে তাদের ভাতার আওতায় আনা হবে।

চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নওরীন হক জানান, নতুন করে এ উপজেলায় কোনো ঘর বরাদ্দ হয়নি, পরবর্তীতে যদি বরাদ্দ হয় তাহলে বিধবা আবেদা খাতুনের আবেদনের ভিত্তিতে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *