উদ্ধারকৃত ৬৫জন জেলেকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে সাতক্ষীরা বনবিভাগ

খুলনা

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: বৈরী আবহাওয়ায় বঙ্গোপসাগরে নিখোঁজ হওয়া পর সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের হলদে বুনিয়াসহ কয়েকটি এলাকা থেকে উদ্ধারকৃত ৬৫জন জেলেকে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে বনবিভাগ।

রোববার বিকেলে সাতক্ষীরা রেঞ্জকর্মকর্তার কার্যালয় থেকে তাদেরকে ফেরত দেওয়া হয়। জেলেরা বরগুনা ও পিরোজপুর জেলার বাসিন্দা।
রবিবার (২১শে আগষ্ট) বিকালে সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষকের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানানো হয়।
পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এ কে এম ইকবাল হোসেন চৌধুরী প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, বিভাগীয় বন কর্মকর্তার নির্দেশনায় সুন্দরবনে স্মার্ট পেট্রোলিং টিমের কার্যক্রম পূর্ব থেকে চলমান। গত শনিবার (২০শে আগষ্ট) স্মার্ট পেট্রোলিং টিম-২ এর টিম লিডার মোঃ স্বাদ আল জামি এর নেতৃত্বে সকালে মালঞ্চ নদী হয়ে খোবরাখালীর ভারানী থেকে মাহামুদা নদীর যাওয়ার পথে ট্রলার দেখতে পায়। তাদের কাছাকাছি গেলে সকলেই কান্নায় ভেঙে পড়ে। তারা জানান ঝড়ের কবলে পড়ে তারা ভাসতে ভাসতে এখানে চলে এসেছে। পরবর্তীতে তাদের উদ্ধার করে প্রথমে হলদেবুনিয়া অফিসে এবং পরবর্তীতে রেঞ্জ অফিসে পাঠানো হয়। উদ্ধার পরবর্তী জেলেদের আত্মীয়-স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঝড়ের কবলে পড়ে বঙ্গোপসাগরে বেশ কিছু ফিশিং বোর্ড নিখোঁজ হয় তার মধ্যে ৩টি বোর্ড ও ৬৫জন জেলে স্মার্ট পেট্রোলিং টীম-২ ও ভারতীয় জেলেদের সহযোগিতায় হলদেবুনিয়া অফিস উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। উদ্ধার পরবর্তী সকল জেলেকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান ও প্রয়োজনীয় খাবারের সহায়তা দেয়া হয়।
নিখোঁজ জেলেদের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকবে। যদি আপনারা যদি খোঁজ পান তাহলে আমাদের জানাবেন আমাদের উদ্ধার অভিযানিক দল সাথে সাথে সেখানে পৌঁছে যাব।
জেলেদের ভাষ্যমতে, ৫টি ফিশিং বোর্ডের মধ্যে চোখের সামনে ২টা বোর্ড প্রবল পড়ে ডুবে যায়।
এফ বি লাকির মাঝি বেলাল বলেন, ঝড়ে কবলে পড়ে চোখের সামনে ভাসতে থাকে। কিন্তু তাদের উদ্ধার করতে পারেনি বলতে বলতে কেদে ফেলেন।
এফ বি লাকি থেকে উদ্ধারকৃত ১৫জন জেলেরা হলেন, বেলাল, নিজাম, আবুল কালাম, ফারুক, শামীম, নাসির, কবির খলিফা, মিজানুর রহমান, খলিলুর রহমান, জলিল, আলমগীর, সিফাত খলিফা, সবুজ পঞ্চাত, কবির মোহাম্মদ ও মোহাম্মদ আলী।
এফ বি মায়ের দোয়া থেকে উদ্ধার কৃত ১৫ জন জেলেরা হলেন, জাফর হালদার, নাঈম শিকদার, মোঃ আলম নুর ইসলাম, মাহবুব হাওলাদার, মোঃ দিলু হাওলাদার, বাদশা, জসিম হাওলাদার, মোঃ ইমরান, জসিম, ইলিয়াস, কামাল বেপারী, শাহাজাহান, আনসার হাওলাদার ও জহির খাঁ।
এফ বি ভাই ভাই ফিশিং বোর্ড থেকে ১১ জন উদ্ধারকৃত জেলেরা হলেন, হাবিবুর রহমান, সাব্বির, আল আমিন, ইয়াসিন, নাসির, মিরাজ, হানিফ, কামাল, ইমদাদুল, জাকির ও রায়হান। উদ্ধার হয় জেলেরা পাথরঘাটা ও ভোলা জেলার বলে জানা গেছে।
ডুবে যাওয়া এফবি ভাই ভাই ও এফবি আল্লাহর দান ফিশিং বোর্ডের ডুবে যাওয়া জেলেদের উদ্ধার করে ভারতীয় জেলেরা। উদ্ধার হওয়া জেলেদের আকুতিতে তাদেরকে পৌঁছে দেয়া হয় হলদেবুনিয়া অফিসে।
পরবর্তীতে উদ্ধার হওয়া এফ বি ভাই ভাই এর জেলেরা হলেন, লোকমান হোসেন, ইব্রাহীম, আলাউদ্দিন, জমাদ্দার, রামেন, ফুল মিয়া, শাহ আলম, আব্দুল আজিজ, সিদ্দিক, শহিদুল, জাহাঙ্গীর, হেলাল ও শহিদুল।
ডুবে যাওয়া অন্য বোর্ড এফ বি আল্লাহর দান থেকে উদ্ধার হওয়ার জেলেরা হলেন, নাসির উদ্দিন, আল আমিন, জালাল, হানিফ, বারিক, আবুল হাওলাদার, মিরাজ মোল্লা, কালাম খান, মানিক হাওলাদার, জুলি আকন ও জালাল।
এফ বি মায়ের দোয়া বোর্ডের মাঝি জাফর হালদার বলেন, আমাদের এলাকার আরও অন্তত ১৯ জেলে নিখোঁজ আছে তারা হলেন, আব্দুল জলিল, নাইম, ছগির, বিল্লাল, বাবলু আকর, জয়নাল, মোহাম্মদ আব্দুল করিম, হেলাল, আসাদ, স্বপন, ফরহাদ, বশির, সজিব, আব্দুল কাদের, আবুল, শুকুর, সাব্বির ও রফিক।
ঝড়ের কলতে থেকে ফিরতে পেরে এবং নিখোঁজ সঙ্গীদের নিয়ে আসতে না পেরে কান্নায় ভেঙে পড়েন অনেকে।
##আসাদুজ্জামান সরদার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *