পাঁচ বিশিষ্ট নারীকে বঙ্গমাতা পদক দিলেন প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়

নিখাদ বার্তাকক্ষ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী ও মহিয়সী নারী বঙ্গমাতার ৯২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য পাঁচ জন বিশিষ্ট নারীকে ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদক-২০২২’ প্রদান করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী আজ সকালে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি পদক বিতরন অনুষ্টানে যোগ দেন।
সোমবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এই পদক আয়োজিত বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও ভার্চুয়ালি এ অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিল।

যে পাঁচ বিশিষ্ট নারী ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদক-২০২২’ পেয়েছেন তাঁরা হলেন, ‘রাজনীতি’র ক্ষেত্রে সৈয়দা জেবুন্নেছা হক (সিলেট), অর্থনীতিতে সেলিমা আহমাদ এমপি (কুমিল্লা), শিক্ষায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপচার্য অধ্যাপক নাসরীন আহমাদ, সমাজসেবা ক্ষেত্রে মোছা. আছিয়া আলম (কিশোরগঞ্জ) এবং স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ ক্ষেত্রে গোপালগঞ্জ জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা আশালতা বৈদ্য (মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার)।
বঙ্গমাতার অবদানকে চিরস্মরণীয় করার লক্ষে প্রতি-বছর আটটি ক্ষেত্রে নারীদের অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ‘ক’ শ্রেণীভুক্ত সর্বোচ্চ জাতীয় পদক ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব’ পদক ২০২১ সাল থেকে প্রদান করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেছা ইন্দিরা পদক প্রাপ্তদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
পুরস্কার হিসেবে ১৮ ক্যারেট স্বর্ণের ৪০ গ্রাম ওজনের পদক, সম্মাননাপত্র এবং ৪ লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয়
মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক বঙ্গমাতার জীবনীর ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এবং আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান চেমন আরা তৈয়ব।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল স্বাগত বক্তৃতা করেন। পদক বিজয়ীদের পক্ষে নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তৃতা করেন সৈয়দা জেবুন্নেছা হক।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর লেখা ‘শেখ ফজিলাতুন নেছা আমার মা’ শীর্ষক একটি গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন।
তিনি ঢাকায় কর্মজীবী নারীদের জন্য ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব’ অত্যাধুনিক ১০ তলা হোষ্টেলও উদ্বোধন করেন।
বঙ্গমাতার ৯২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠান থেকে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে ২৫০০ অসচ্ছল নারীর মাঝে ৫০ লাখ টাকার আর্থিক সহায়তা বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। জেলা প্রশাসন গোপালগঞ্জ অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে এই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক শুরু করলেও যুগপৎ সারাদেশেই এই কর্মসূচি পালিত হয়। প্রত্যেক নারী পাচ্ছেন ২০০০ টাকা। মোট অর্থের মধ্যে ১৩ লাখ টাকা বন্যা কবলিত জেলা সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও নেত্রকোনার নারীদের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া অনুষ্ঠানে সারাদেশে দুস্থ নারীদের মধ্যে মোট সাড়ে চার হাজার সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে বঙ্গমাতার জীবনী ভিত্তিক প্রামান্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় নির্মিত অত্যাধুনিক কর্মজীবী মহিলা হোষ্টেলের বিষয়েও একটি তথ্য চিত্র অনুষ্ঠানে প্রদর্শন করা হয়।
পরে জাতির পিতা, বঙ্গমাতা এবং ‘৭৫ এর ১৫ আগষ্টের শহিদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাতও অনুষ্ঠিত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *