আইনের দৃষ্টিতে জোবাইদা রহমান পলাতক আসামি: আপিল বিভাগ

আইন ও আদালত

নিখাদ বার্তাকক্ষ : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমানকে আইনের দৃষ্টিতে পলাতক ঘোষণা করে রায় দিয়েছে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশীদ আলম খান আজ বাসস’কে বলেন, মামলা আমলে নেয়ার আগেই হাইকোর্টে আবেদন শুনা ঠিক হয়নি। তাছাড়া আইনের দৃষ্টিতে জোবাইদা রহমান পলাতক।
দুদক আইনজীবী বলেন, আপিল বিভাগ তার রায়ে জোবাইদা রহমানকে আইনের দৃষ্টিতে পলাতক বলেছেন। আর পলাতক অবস্থায় তার আবেদন শোনা ঠিক হয়নি। পলাতক আসামি কোনো আদালতে হাজির না হয়ে আবেদন করতে পারবেন না।
তিনি বলেন, জোবায়দা রহমানের একটা আবেদন আপিল বিভাগ খারিজ করে দিয়েছেন৷ এ সংক্রান্ত একটা রায় আজকে প্রকাশ করা হয়েছে।
জোবায়দা রহমান বিষয়ে অবৈধ সম্পদ অর্জন সংক্রান্ত মামলা নিয়ে এই আদেশ দেয় আপিল বিভাগ।
আত্মসমর্পণ না করে সরাসরি হাইকোর্টে আবেদন করতে তিনি পারেন না। এ ঘটনাকে নজিরবিহীন বলেও উল্লেখ করেছে আদালত।
খুরশীদ আলম খান বলেন, সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান। অথচ দেখা গেছে, সেই সুবিধা তাকে দেয়া হয়েছে। কাজেই অ্যাপেক্স কোর্টের দায়িত্বই ছিল এটা। আদালতে আত্মসমর্পণ না করে কীভাবে হাইকোর্ট এ মামলা শুনলেন তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
১৬ পৃষ্ঠার রায়ে বলা হয়েছে, হাইকোর্ট এ মামলাটি এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে শুনেছিল। শত বছরের নজির ভেঙে জোবাইদা রহমানের মামলাটি শুনেছে বলেও উল্লেখ করে আপিল বিভাগ।
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনে সহযোগিতার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলা বাতিলে জোবায়দা রহমানের ‘লিভ টু আপিল’ খারিজ করে দিয়ে গত ১৩ এপ্রিল আদেশ দেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বিভাগ বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
জোবায়দা রহমানের পক্ষে আদালতে আইনজীবী ছিলেন সিনিয়র এডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন এটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
দুদক আইনজীবী বাসস’কে আদালতের আদেশের বিষয়টি ১৩ এপ্রিল নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আবেদনটি খারিজ হওয়ায় জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে বিচারিক আদালতে মামলাটি চলতে আইনগত কোনো বাধা রইলো না।
সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারেক রহমান, জোবায়দা রহমান ও তাঁর মা সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলাটি দায়ের করে দুদক। পরের বছর তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এরপর মামলা বাতিল চেয়ে জোবায়দা রহমান হাইকোর্টে আবেদন করেন।
শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল হাইকোর্ট জোবায়দা রহমানের আবেদন খারিজ (রুল ডিসচার্জ) করে রায় দেন। হাইকোর্ট রায়ে ওই মামলায় আট সপ্তাহের মধ্যে জোবায়দা রহমানকে বিচারিক আদালতে উপস্থিত হতে নির্দেশ দেয়া হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরই ‘লিভ টু আপিল’ করেন জোবায়দা রহমান।
ডাঃ জোবায়দা রহমান তার স্বামী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *